এমএ কবীর, ঝিনাইদহ : ঝিনাইদহ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের মধ্যে বিরোধ এখন তুঙ্গে। পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলনে সরকারী এই দপ্তরটিতে উত্তেজনা ছড়িয়ে পেড়েছ। দপ্তরটির সরকারী কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মাঝে একধরণের অনিহা কাজ করছে। বুধবার ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবে জেলা পরিষদের ৭ জন নির্বাচিত সদস্য যৌথ সংবাদ সম্মেলনে চেয়ারম্যান হারুণ অর রশিদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, আর্থিক অনিয়ম ও চরম সেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তোলার পর বৃহস্পতিবার দুপুরে খোদ চেয়ারম্যান নিজেই গনমাধ্যম কর্মীদের মুখোমুখি হন। জেলা পরিষদের কনফারেন্স রুমে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ তার বিরুদ্ধে অপপ্রচারের প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, জেলা পরিষদের নির্বাচিত কিছু সদস্য তার কাছে বিভিন্ন সময় অনৈতিক সুবিধা দাবী করে আসছিলো। অনৈতিক সুবিধা না পেয়ে তারা নানা ভাবে অপপ্রচার করছে। জেলা পরিষদের নিয়ম অনুযায়ী মন্ত্রনালয়ের অনুমোদন নিয়ে বিভিন্ন বরাদ্দ প্রদাণ, আর্থিক লেনদেন করা হচ্ছে। কোন প্রকার অনিয়ম বা দুর্নীতি হচ্ছে না। তিনি লিখিত বক্তব্যে দাবী করেন, সেলাই মেশিন ও বাইসাইকেল বিতরণের জন্য রক্ষিত আছে। পরিষদের দোকান বা ঘর বরাদ্দে কোন দুর্নীতি হয়নি। এছাড়া রাস্তার গাছ টেন্ডারও সচ্ছভাবে সম্পন্ন হয়েছে। ঝিনাইদহের চার এমপি তার বিরুদ্দে অবস্থান গ্রহন সম্পর্কে তিনি বলেন, ঝিনাইদহ-৩ আসনের সংসদ সদস্য শফিকুল আজম খান চঞ্চলের নির্বাচনী এলাকার একজন কর্মচারী জেলা পরিষদে কর্মরত ছিলেন। সে নানা অনিয়মের সঙ্গে জড়িত। বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহন করায় মহেশপুরের এমপি ভুল বুঝেছেন। তাছাড়া কালীগঞ্জের এমপি আনোয়ারুল আজিম আনার জেলা পরিষদের নির্বাচনে তার প্রতিপক্ষ ছিলেন। সেই দৃষ্টিকোন থেকে তিনি বিরোধীতা করছেন বলে হারুন দাবী করেন। জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বলেন, আমি দ্বায়িত্ব গ্রহনের পর থেকে সাধারণ জনগণের কল্যাণে বরাদ্দকৃত অর্থ যেন যথাযথ ভাবে ব্যবহার করা হয় সে লক্ষ্যে কাজ করছি। কিন্তু আমার পরিষদে আমারই সাথে অবস্থান করা কিছু সদস্য ব্যক্তি স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য আমাকে নানা ভাবে প্রলুদ্ধ করতো। তাদের কথায় রাজি না হলে তারা জোটবদ্ধ ভাবে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত আছে। সংবাদ সম্মেলনে জেলা পরিষদের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখ্য বুধবার দুপুরে জেলা পরিষদের ৭ জন নির্বাচিত সদস্য যৌথ সংবাদ সম্মেলন করে চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদের প্রতি অনাস্থা জ্ঞাপন করেন। তাদের দাবী চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর সরকারী এই দপ্তরটি হারুন নিজের এনজিওতে পরিণত করেছেন। সৃজনী এনজিওর প্রশাসনিক কর্মকর্তা নাজমুল হুসাইন ও হিসাব রক্ষক অর্জুন কুমারকে জেলা পরিষদের অফিসে আলাদা রুমে বসিয়ে ভুয়া ও কল্পিত প্রকল্প বানিয়ে সরকারী টাকা আত্মসাৎ করে যাচ্ছেন। পরিষদের সদস্যদের এ সব অভিযোগ দেশের জাতীয় ও আঞ্চলিক প্রত্রিকা ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হলে ঝিনাইদহ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ বৃহস্পতিবাদ পাল্টা সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন।
Leave a Reply